নারায়ণগঞ্জ জেলার পরিচিতি

0
3150

নারায়ণগঞ্জ জেলার তথ্যাবলী (narayanganj)

নারায়ণগঞ্জ ( narayanganj ) বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী-বন্দর। ‘‘প্রাচ্যের ডান্ডি’’ বলে পরিচিত এ জেলা রাজধানী ঢাকা হতে মাত্র ১৬ কিঃ মিঃ দূরে।

নারায়ণগঞ্জ শহের জেলার প্রশাসনিক সদরদপ্তর অবস্থিত। অত্যন্ত প্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ সোনারগাঁও এ জেলার অন্তর্গত। নারায়ণগঞ্জ সোনালী আশঁ পাটের জন্য প্রাচ্যের ড্যান্ডি নামে পরিচিত। শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর একটি বিখ্যাত নদী বন্দর। ৬৮৩.১৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ জেলাটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা। রাজধানী ঢাকার সাথে এ জেলার সীমানা রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) জেলা রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পূর্বে, ২৩°৩৩’ থেকে ২৩°৫৭’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৬’ থেকে ৯০°৪৫’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। পূর্বে – ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা, পশ্চিমে – ঢাকা, উত্তরে – নরসিংদী ও গাজীপুর এবং দক্ষিণে – মুন্সিগঞ্জ জেলা। ঢাকা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকায় পাললিক মাটি জাতীয় সমতল ভূমিতে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ শহর।

২৯২ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জকে জেলা হিসেবে ঘোষনা করা হয় যা ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত । ১৮৮২ সালে নারায়ণগঞ্জকে মহকুমা ঘোষিত হয়, যা ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত হয়। ২০১১ সালের ৫ই মে নারায়ণগঞ্জ সদরকে সিটি কর্পোরেশন করা হয় ।

নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) জেলার পটভূমি

১৭৬৬ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বিকন লাল পান্ডে (বেণুর ঠাকুর বা লক্ষীনারায়ণ ঠাকুর নামে ও পরিচিত) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিকট থেকে এ অঞ্চলের মালিকানা গ্রহণ করেন। তিনি প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয়ভার বহনের জন্য একটি দলিলের মাধ্যমে শীতলক্ষা নদীর তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন। তাই পরবর্তীকালে এ স্থানের নাম হয় নারায়ণগঞ্জ। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নামের কোনো নগরীর অস্তিত্ব প্রাচীন বাংলার মানচিত্রে পাওয়া যায় না।

নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) নামকরণের পূর্বে সোনার গাঁ ছিল প্রাচীন বাংলার রাজধানী। মুসলিম আমলের সোনার গাঁ নামের উদ্ভব প্রাচীন সুবর্ণগ্রামকে কেন্দ্র করেই। বহু অঞ্চলে মুসলিম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ঢাকা নগরের অভ্যুদয়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ-পূর্ববঙ্গের প্রশাসনিককেন্দ্র ছিল সোনার গাঁ। ফিরোজ শাহ চতুর্দশ শতাব্দির প্রায় প্রথমদিকে এই অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে তা অন্তর্ভুক্ত করেন লখনৌতি রাজ্যের। এর ফলে ঘটে হিন্দু রাজত্বের অবসান। সোনারগাঁ লখনৌতি রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকে গিয়াসউদ্দীন বাহাদুর শাহ-এর ক্ষমতালাভের (১৩২২) পূর্ব পর্যন্ত সময়ে সোনারগাঁয়ের গুরুত্ব সাময়িকভাবে কিছুটা কমে গেলেও এটি একটি বন্দর ও টাঁকশাল শহর হিসেবে গুরুত্ব পেতে থাকে। ১৩২৪ খৃস্টাব্দে গিয়াসউদ্দীন তুঘলক বাংলা অধিকার করে সাতগাঁও, লখনৌতি ও সোনারগাঁ- এই তিনটি প্রশাসনিক অংশ বা ইউনিটে বিভক্ত করেন। ১৩৩৮ থেকে ১৩৫২ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত সোনারগাঁ ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন রাজ্যের রাজধানীর মর্যাদা লাভ করে। বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ। তিনি সোনারগাঁয়ের শাসনকর্তা বাহরাম খানের সাহায্যকারী ছিলেন। ১৩৩৮ খৃস্টাব্দে সুলতানের মৃত্যু ঘটলে দিল্লী হতে নতুন শাসনকর্তা নিয়োগে বিলম্ব হলে তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করে সোনার গাঁ অধিকার করেন। শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ সোনারগাঁ দখল করেন ১৩৫২ খৃস্টাব্দে। সেখান থেকে জারি করা হয় মুদ্রা। সুদুর বাগদাদ নগরী থেকে দিল্লী আধ্যাত্নিক সাধু সম্রাট শাহ ফতেহউল্লাহ্ ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এখানে আসেন। পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যুর পরে এখানেই কবরস্থ করা হয়। তার নাম থেকেই বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত সুফী সাধকের স্মৃতি বিজড়িত এক সময় পরগনা নামে পরিচিত এই এলাকার একটি অঞ্চল ফতেহউল্লাহ্ বা ফতুল্লা নামকরণ করা হয়।

মুসা খানের পতনের পর (১৬১১) সোনার গাঁ মুঘল সুবাহ বাংলার একটি সরকারে পরিণত হয়। সোনারগাঁয়ের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বের দ্রুত পতন শুরু হয় ঢাকার মুঘল রাজধানী স্থাপনের (১৬১০) পর থেকেই। সোনারগাঁয়ের একটি অংশে ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ থেকে বিংশ শতাব্দির প্রথমদিকে গড়ে উঠেছিল পানাম নগর। নানা স্থাপত্য নিদর্শন থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, বর্তমান পানাম নগর ও খাস নগরের মধ্যবর্তী এলাকার বিস্তৃত হিন্দু আমলের রাজধানী শহর মুসলিম আমলে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়নি, সম্ভবত এই স্থানে প্রথমদিকের মুসলিম শাসনকর্তাদের আবাসস্থল ছিল।

মোগল আমলেরও পূর্বে খিজিরপুর, কদমরসুল ও মদনগঞ্জ বাণিজ্যিক অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক নদীবন্দর ছিল। পলাশী যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনীর কাছে বাংলার শেষ নবাবের পরাজয়ের পর পর ইংরেজরা দল বেঁধে এ অঞ্চলে আসতে থাকে ব্যবসা-বাণিজ্যের আশায়। সে সময় এ অঞ্চল পাট, লবণ ও বিভিন্ন ধরনের খাবার মসলার জন্য বিশ্বখ্যাতি অর্জন করেছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমনের সঙ্গে সঙ্গে শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ের গুরুত্ব বাড়তে থাকে। রাজধানী ঢাকা ও সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এবং বর্তমান নারায়ণগঞ্জের (narayanganj) সঙ্গে (শীতলক্ষ্যার পশ্চিমপাড়) সড়ক ও জল পথের সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কোম্পানির লোকেরা শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম সড়কে অধিক গুরুত্ব দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। একের পর এক নিম্ন জলাভূমি ভরাট করে গড়ে তোলে ঘরবাড়ি। কোম্পানির আগে মোগল সরকারের আমলে এই নদী বন্দর থেকে ব্যবসায়িক রাজস্ব আয় ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ টাকা ১০ আনা ৯ পয়সা। কোম্পানির আমলে ১৮৫০ সালে এই বন্দর থেকে ৩ কোটি গজ চট বস্ত্র ইউরোপ, আমেরিকায় রফতানি করে। তখন ১০০ চট বস্ত্রের মূল্যে ছিল ৭ টাকা। পলাশী যুদ্ধে যেসব ব্যক্তি ইংরেজদের সাহায্য ও সহযোগিতা করেছিল তাদের প্রত্যেককে ইংরেজ সরকার পুরস্কৃত করে। এই সুবাদে বাংলা ১১৭৩ সালে ভীখন লাল ঠাকুর ওরফে লক্ষ্মী নারায়ণ ঠাকুর কোম্পানির নবাব মোজাফফর জঙ্গের (মহম্মদ রেজা খান) কাছ থেকে একটি দলিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলের ভোগস্বত্ব লাভ করেন। লক্ষ্মী নারায়ণ ঠাকুরের নামে উৎসর্গকৃত বলে এই অঞ্চলের নাম খিজিরপুর বদলিয়ে অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয় নারায়ণগঞ্জ। নরসিংদীর টোকবর্গী থেকে মুন্সীগঞ্জের মোহনা পর্যন্ত দীর্ঘ ৬৫ মাইল শীতলক্ষ্যা নদী নারায়ণগঞ্জের ওপর দিয়ে প্রবাহিত। ইংল্যান্ডের টেমস নদীর পর পৃথিবীর দ্বিতীয় ‘হারবার’ বেষ্টিত শান্ত নদী শীতলক্ষ্যা। এক সময় ইংল্যান্ডের ওষুধ কোম্পানিগুলো ওষুধ তৈরির কাজে এই নদীর স্বচ্ছ সুশীতল পানি ব্যবহার করতো। কোম্পানি এ অঞ্চলকে আধুনিক শিল্প বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ১৮৭৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর লক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড় কদমরসুল, বন্দর ও মদনগঞ্জ এবং পশ্চিম পাড়ের মোট ৪.৫ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা ঘোষণা দেয়া হয়। প্রথম পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মি. এইচটি ইউলসন। ১৮৬৬ সালে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ( narayanganj ) ও সোনারগাঁয়ের সঙ্গে ডাক যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু হয়। এ সময় রানারের মাধ্যমে ডাক সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল। ডাক বিভাগের শাখা ছিল বরপা, হরিহরপাড়া, নবীবগঞ্জ, কাইকারটেক, শীতলক্ষ্যা, টানবাজার ও সোনারগাঁয়ের পানাম নগরীতে। ইংরেজরা তাদের নিজেদের ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করার জন্য ব্যক্তিগত এক্সচেঞ্জ বসিয়ে ১৮৭৭ সালে টেলিফোন সার্ভিস চালু করেন। ইংরেজরা তাদের একচেটিয়া বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বণিকদের উৎসাহিত করতে নারায়ণগঞ্জ নৌবন্দরকে ১৮৮০ সালে ফ্রিপোর্ট ঘোষণা দেয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নারায়ণগঞ্জের আগমনের পর পর উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকল্পনা অনুযায়ী নদী পথে নারায়ণগঞ্জের  (narayanganj) সঙ্গে সমুদ্র পথের চট্টগ্রাম বন্দর, কলকাতাসহ বিভিন্ন নদী পথে নৌ-পরিবহন ব্যবস্থা চালু হয়। তখন কলকাতা ও আসাম থেকে যাত্রী এবং মালামাল নিয়ে নারায়ণগঞ্জ নৌবন্দরে স্টিমার ভিড়তো। এ সময় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থান ভ্রমণের একমাত্র পথ ছিল নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর। এ জন্য নারায়ণগঞ্জকে বাংলা ভ্রমণের প্রবেশদ্বার বলা হতো। যাত্রী সাধারণের সুবিধার দিকে নজর দিয়ে ও মালামাল পরিবহন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ১৮৮৫ সালে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন সার্ভিস চালু হয়। সব মেইল ট্রেন এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই ছেড়ে যেত। ফলে ভারতবর্ষের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ শিল্প ও বন্দর নগরীর যোগাযোগ স্থাপিত হয়। স্থল পথ, জল পথ ও টেলিযোগাযোগের সুব্যবস্থার কারণে বিশ্ব বাণিজ্য বাজারে স্থান করে নেয়।

৫২ এর ভাষা আন্দোলন নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে স্বরণীয় ও বরণীয় এক অধ্যায়। যেহেতু নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) থেকে ২০ কিঃমিঃ অদুরেই অবস্থিত ঢাকা জেলা, তাই পার্শ্ববর্তী জেলা হিসেবে পাকিসত্মানী স্বৈরশাসককে উৎখাত করার জন্যই এ এলাকার জনগন ছিল প্রতিবাদমুখর। তৎকালীন ছাত্রনেতা শামসুজ্জোহা, বজলুর রহমান, বদরম্নজ্জামান, মফিজ উদ্দিন, হাবিব রশিদ, সুলতান মাহমুদ মলি­ক, কাজী মজিবুর , শেখ মিজান ও এনায়েত নগরের শামসুল হক প্রমুখের নের্তৃত্বে ভাষা আন্দোলনে স্বক্রীয় ভূমিকা নিতে সক্ষম হন। এখনও এ অঞ্চলের প্রতিটি মানুষ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে অমত্মরে ধারন করে প্রতিবৎসর ২১শে ফেব্রম্নয়ারী প্রভাতফেরীতে অংশগ্রহন করেন।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে এক বলিষ্ট ভূমিকা ছিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন সুসংঘঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার এম,এ গনি, মোহাম্মদ আলী, মোঃ নাসির উদ্দিন, মহিউদ্দিন রতন, নুরম্নল ইসলাম, মোঃ সামসুল হক, মমিনুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান প্রমুখ উলে­খযোগ্য। ফতুল্লার পঞ্চবটিতে ডালডার মিল নামের এলাকা ছিল পাকসেনাদের দখলে। প্রতিরাতে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে যুমনা জেটির কাছে নিয়ে আসত এবং গুলিবর্ষন করে হত্যার পরে লাশগুলো বুড়িগঙ্গা নদীর জলে নিক্ষেপ করে ভাসিয়ে দেওয়া হতো জানা যায়। মুক্তিযোদ্ধা দুলাল ও আমিনুর ডিক্রিরচর ও কানাইনগরে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি শক্তিশালী গ্রুপ তৈরী করেন। বাবুরাইলের মুক্তিযোদ্ধা শরিফুল আশ্রাফ যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হন।

 নামকরণ

১৭৬৬ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা বিকন লাল পান্ডে, যিনি বেণুর ঠাকুর বা লক্ষী নারায়ণ ঠাকুর নামে অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিকট থেকে এ অঞ্চলের মালিকানা কিনে নিয়েছিলেন। তিনি প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয়ভার বহনের জন্য একটি উইলের মাধ্যমে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পতি হিসেবে ঘোষণা করেন। তাই পরবর্তীকালে এ স্থানের নাম হয় নারায়ণগঞ্জ।কালেক্টরেটের প্রারম্ভিক দলিল-দস্তাবেজে নারায়ণগঞ্জের নাম উল্লেখ পাওয়া যায়।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ভৌগোলিক পরিচিতি

নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী-বন্দর। ‘‘প্রাচ্যের ডান্ডি’’ বলে পরিচিত এ জেলা রাজধানী ঢাকা হতে মাত্র ১৬ কিঃ মিঃ দূরে এবং ঢাকা শহরের উপকন্ঠে ২৩.৩৪ ও ২৪.১৫ অক্ষাংশে এবং ৯০.২৭ ও ৯০.৫৯ দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এর উত্তরে নরসিংদী ও ব্রাক্ষণবাড়ীয়া জেলা, পূর্বে কুমিল্লা, পশ্চিমে ঢাকা জেলা এবং দক্ষিণে মুন্সীগঞ্জ জেলা। নারায়ণগঞ্জের মধ্য দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী প্রবাহিত। পূর্ব সীমানা দিয়ে মেঘনা নদী, পশ্চিম সীমানার কিছু অঞ্চল দিয়ে বুড়িগঙ্গা এবং দক্ষিণ/পশ্চিম সীমানায় ধলেশ্বরী নদী প্রবাহিত। নারায়ণগঞ্জ ১৯৪৭ সালে মহকুমায় এবং ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত হয়। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক এবং রেলপথ নির্মাণের পূর্বে ঢাকার সাথে নারায়ণগঞ্জের যোগাযোগ মূলত: শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদী পথেই হ’ত। জেলার আবহাওয়া মোটামুটি সমভাবাপন্ন। গরম ও শীতকালের গড় তাপমাত্রার ব্যবধান প্রায় ১৭.৫ ডিগ্রী ফাঃ। এ জেলায় বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমা্ণ ১৮৩ সে. মি.।

নারায়ণগঞ্জ জেলার জনসংখ্যা

২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী জেলার জনসংখ্যা হল ৩০,৭৪,০৭৭ জন। ২০১১ সালের আদমশুমারী ও গৃহগণনা অনুসারে নারায়নগঞ্চ (narayanganj) জেলার জনসংখ্যা ছিল ২৯৪৮২১৭ জন জাতীয় জনসংখ্যার ২.০৫%, যা মঙ্গোলিয়ার মত একটি বৃহৎ রাষ্ট্রের জনসংখ্যার সমানবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের মোট জনংখ্যার সমান। জেলায় পুরুষ জনসংখ্যা ১৫২১৪৩৮ জন এবং নারী জনসংখ্যা ১৪৬৭৭৯ জন। নারী ও পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত ১০৭:১০০, যা জাতীয় অনুপাতের চেয়ে অনেক বেশি। ২০০১-২০১১ এর দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩.৫%। জেলায় জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৩০৮ জন বা প্রতি বর্গমাইলে ১১১৫৭ জন মানুষ বসবাস করে। গৃহহীন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৬৬৮ জন। ২০১৫ সালের জেলা পরিসংখ্যান তথ্য অনুযায়ী এ জেলায় স্বাক্ষরতার হার ৫৭.১০%, নারী স্বাক্ষরতার হার ৫৯.৪৮% এবং পুরুষ স্বাক্ষরতার হার ৫৪.৫৬%, যা জাতীয় স্বাক্ষরতার হার ৬৬.৪% এর চেয়ে কম। জেলায় ৬৭৫৬৫২ টি খানা বা পরিবার রয়েছে, প্রতি পরিবারের আকার ৪.৩৪%।

জেলা পরিসংখ্যান অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ ( narayanganj ) জেলার মোট জনসংখ্যার মধ্যে ২৮০২৫৬৭ জন মুসলামন, ১৪৪১০৫ জন হিন্দু, ৯৬৩ জন খ্রিস্টান, ৩৭৮ জন বৌদ্ধ এবং ২০৪ জন অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। ধর্মহীন বা নাস্তিকদের কোন পরিসংখ্যানগত সরকারি তথ্য নেই। 

মোট জনসংখ্যা ২৯,৪৮,২১৭ জন
পুরুষ ১৫,২১,৪৩৮ জন
  মহিলা  ১৪,২৬,৭৭৯ জন
মোট পরিবার ,৫৩,৬২৭ টি
মোট কৃষক পরিবার ,৭২,২৮৯ টি
বড় কৃষক পরিবার (৭.৪ একরের উর্দ্ধে) ,৪৫৪ টি
মধ্যম কৃষক পরিবার (২.৫ – ৭.৪৯ একর) ,,২৬৪ টি
ক্ষুদ্র কৃষক পরিবার ( ১.৫- ২.৪৯ একর) ৬৫,২০০ টি
প্রান্তিক কৃষক পরিবার (০.৫- ১.৪৯ একর) ৭৭,১৮৪ টি
ভূমিহীন পরিবার (০.৪৯ একর ও তার কম) ৪৫,৫৮৭ টি
প্রতিবর্গ কিঃ মিঃ এ লোকসংখ্যা ,৮৬৩ জন
শিক্ষার হার ৫১.৭৫%

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ

নারায়ণগঞ্জ জেলার অভ্যন্তরীণ মানচিত্র

২৯২ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয় যা ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। ১৮৮২ সালে নারায়ণগঞ্জ মহকুমা ঘোষিত হয়, যা ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত হয়। ২০১১ সালের ৫ই মে নারায়ণগঞ্জ সদরকে সিটি কর্পোরেশন করা হয় ।

সাধারণ তথ্য

আয়তন     ৬৮৩.১৪ বর্গ কিঃ মিঃ
বনভূমি  ৬২ হেঃ
শহর অঞ্চল  ৩০৮০ হেঃ
 উপজেলা ০৫ টি (নারায়ণগঞ্জ সদর, বন্দর, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ)
উপজেলা ভূমি অফিস ০৭ টি ( নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ,বন্দর, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ)।
  থানা ০৭ টি ( নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ,বন্দর, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ)।
ইউনিয়ন ৩৯ টি
ইউনিয়ন ভূমি অফিস ৪৩ টি (নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরে ইউনিয়ন ভূমি অফিস ০২ টি বেশী)
সিটি কর্পোরেশন ০১ টি
পৌরসভা ০৫ টি (আড়াইহাজার, গোপালদী, তারাব, কাঞ্চন, সোনারগাঁ)
মৌজা ৭৫৭ টি
গ্রাম ,৩৭৪ টি

* মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৬৩টি,

* পৌরসভা – ০১টি- সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা।

* ৫টি ইউ,পি নিয়ে ডি.এন.ডি এলাকা গঠিত। এর আয়তন ৮,৫৪০ একর।

* সিটি কর্পোরেশন – ০১টি। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, বন্দর থানার কদমরসুল ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে এ কর্পোরেশন গঠিত হয়েছে)

উপজেলা পরিষদের তালিকা

উপজেলা পরিষদ বাংলাদেশের প্রসাশনিক ব্যবস্থার একটি একক অংশ। সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন সরকারি কর্মকর্তা বা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ এন ও) এই পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাহিসেবে সমস্ত নির্বাহী দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলা পরিষদের মেয়াদকাল মিটিং এর দিন থেকে ৫ বছর হয়ে থাকে।

নারায়ণোগঞ্জ (narayanganj) জেলার ০৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে :

নারায়ণগঞ্জ সদর
আড়াইহাজার
বন্দর
রূপগঞ্জ
সোনারগাঁ

নারায়ণগঞ্জ জেলার ইউনিয়নের তালিকা

  • নারায়ণগঞ্জ সদর  উপজেলার ইউনিয়ন
    ফতুল্লা ইউনিয়ন, আলীরটেক ইউনিয়ন, কাশিপুর ইউনিয়ন, কুতুবপুর ইউনিয়ন, গোগনগর ইউনিয়ন, বক্তাবলী ইউনিয়ন, এনায়েতনগর ইউনিয়ন
  • আড়াইহাজার উপজেলার ইউনিয়ন
    সাতগ্রাম ইউনিয়ন, দুপ্তারা ইউনিয়ন, ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়ন, ফতেপুর ইউনিয়ন, বিশনন্দী ইউনিয়ন, মাহমুদপুর ইউনিয়ন, হাইজাদী ইউনিয়ন, উচিৎপুরা ইউনিয়ন, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন, খাদকান্দা ইউনিয়ন
  • বন্দর  উপজেলার ইউনিয়ন
    মুছাপুর ইউনিয়ন, মদনপুর ইউনিয়ন, বন্দর ইউনিয়ন, ধামগর ইউনিয়ন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন
  • রূপগঞ্জ  উপজেলার ইউনিয়ন
    মুড়াপাড়া ইউনিয়ন, ভূলতা ইউনিয়ন, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন, দাউদপুর ইউনিয়ন, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন, ভোলাব ইউনিয়ন
  • সোনারগাঁ  উপজেলার ইউনিয়ন
    পিরোজপুর, শম্ভুপুরা, মোগরাপাড়া, বৈদ্যেরবাজার, বারদী, নোয়াগাঁও, জামপুর, সাদিপুর, সনমান্দি, কাঁচপুর

নারায়ণগঞ্জ জেলার ঐতিহ্য

জামদানি শাড়ী

অতীত বাংলার মসলিনের গৌরবদীপ্তের আংশিক রেশ নিয়ে আজো অনন্য। প্রাচীনকাল থেকে আমাদের এ শিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে। রঙ-বেরঙের সুতা আর প্রধানত প্রকৃতিনির্ভর গ্রামীন নকশায় কারুশিল্পীদের সুনিপূন হাতে নান্দনিক রুপ ও বৈচিত্রের এক অনবদ্য সৃষ্টি জামদানি। অতি সাধারন উপাদানে আমাদের কারুশিল্পীদের মনের মাধুরী মেশানো রঙের বহুবিধ ব্যবহার ও কারুকাজের সমন্বয় ঘটছে জামদানী তৈরিতে। কালের আবর্তে আমাদের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও ঐতিহ্যবাহী মসলিনের উত্তরাধিকার জামদানি শিল্প স্বকীয়তার মাঝে আজো বিকশিত হচ্ছে। এখন দেশের বাজারে জামদানি পন্যের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ববাজারে জামদানি পন্যের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ববাজারও প্রসারিত হচ্ছে। একান্তভাবে দেশীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের ব্যবহারে শিল্পীদের মৌলিক শিল্পবোধ ও ধ্যান ধারনায় সৃষ্টি জামদানি। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর আর কোন দেশের কারিগরদের পক্ষে জামদানি তৈরি সম্ভব হয়নি। এ পন্যের আলাদা বৈশিষ্ট হচ্ছে, এর শিল্পীরা সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই। আদিকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম, সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার কিছু এলাকায় জামদানি কারুশিল্পীদের বংশানুক্রমিক বসবাস। জামদানি শিল্পীদের অন্যত্র নিয়ে গিয়ে এটি তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এ প্রচেষ্টা সফল হয়নি। কারন এ শিল্প বংশানুক্রমিক পারিবারিক পরিমন্ডলে সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে শিল্পভহবন তৈরি করেছে, তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। তাছাড়া শীতলক্ষ্যা নদীর পানি থেকে ভস্মিত বাষ্প জামদানি সুতা প্রস্ত্তুত ও কাপড় বুননের জন্য অনুকূল। প্রয়োজন ও সময়ের বাস্তবতায় এ শিল্পের বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জামদানি তাঁতিদের স্বর্নযুগের পুনঃনির্মানের উদ্যোগ গ্রহনের সচেতনতার দায়িত্ব আমাদের সবার।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ভাষা ও সংস্কৃতি

নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) জেলা ঢাকা শহরের নিকটবর্তী হওয়ায় জেলার জনসাধারণ প্রচলিত বাঙলা ভাষায় কথা বলে। তবে এ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে মিশ্র/ আঞ্জলিক ভাষার ব্যবহার দেখা যায়। নারায়ণগঞ্জ  সংস্কৃতি সমৃদ্ধ জেলা । প্রাচীনকাল থেক এ জেলায় জারীগান, মুরশীদী  গান, ভাওয়াইয়া গানসহ আঞ্চলিক অনেক গান প্রচিলত আছে

বেদে সংস্কৃতি

মেঘনা নদীর চঞ্চল স্রোতধারা থেকে একটি শাখানদী বেরিয়ে এসে সোনারগাঁওয়ের ভাটিবন্দর রঘুভাঙ্গা এলাকায়। এখানে নৌকার ওপর বসতি স্থাপন করেছে বেদে সম্প্রদায়। এখানে রয়েছে ১২টি বেদের নৌকা। তারা এখানে রয়েছে প্রায় এক বছর যাবৎ।

পুরনো নীতি অনুযায়ী এখনো চলছে বেদেদের বিয়ে। বিয়ের আগ মুহূর্তে বরকে গাছের মগডালে উঠিয়ে কনেকে গাছের নিচে রাখা হয়। এ সময় বর গাছের উপর থেকে চিৎকার করে কনেকে বলে আমি গাছ থেকে পড়ে মারা গেলাম। তখন কনে উচ্চৈঃস্বরে বরকে গাছ থেকে নেমে আসতে বলে। তুমি গাছ থেকে পড়ে মরে (মারা) যেও না। অমি তোমাকে সারাজীবন খেটে খাওয়াব। তখনই বর গাছ থেকে নেমে আসে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার অর্থনীতি

রপ্তানী শিল্পে পাট যখন বাংলাদেশের প্রধানতম পণ্য, তখন নারায়ণগঞ্জ “প্রাচ্যের ডান্ডি” নামে খ্যাত থাকলেও বর্তমানে নিট গার্মেন্টস ও হোসিয়ারী হোসিয়ারী শিল্পের জন্য সুপরিচিত। নিটওয়্যার রপ্তানীকারকদের সংগঠন “বিকেএমইএ” ও হোসিয়ারী শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রধান কার্যালয় “হোসিয়ারী সমিতি” নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। ফতুল্লা এনায়েতনগর এলাকায় অবস্থিত বিসিক শিল্পনগরীতে প্রায় ৭০০ গার্মেন্টস আছে। সারা নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) শহরে প্রায় ১ হাজার রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস আছে। এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ গার্মেন্টসই নিট গার্মেন্টস। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের তৈরী পোষাক রাজধানী ঢাকাতে ও বেশ সুনাম অর্জন করতে পেরেছে।

বর্তমানেও নারায়ণগঞ্জ ( narayanganj ) পাট শিল্পের জন্য বিখ্যাত। বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাটকল আদমজী পাটকল নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত ছিল যা বর্তমানে বন্ধ করে আদমজী ইপিজেড গড়ে তোলা হয়েছে। পাট ব্যবসায়ী ও রপ্তানীকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশন বা বিজেএ এর প্রধান কার্যালয় নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত।

দেশের প্রধান নদীবন্দর নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত যা শতবছরের পুরনো। সবচেয়ে বড় সারের পাইকারী বাজার নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। দেশের প্রধানতম লবণ কারখানা ও নির্মাণ সামগ্রীর পাইকারী বাজারের জন্য ফতুল্লা বিখ্যাত। এছাড়া লবন, গম, আটা ও ময়দা পাইকারী ব্যবসা ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। দেশের প্রধানতম সিমেন্ট কারখানাগুলো সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদীর তীরজুড়ে গড়ে উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ ও রূপগঞ্জ উপজেলা ব্যতিত সকল উপজেলার প্রধান অর্থনীতি হলো কৃষি্।

রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁও অঞ্চলের জামদানি ও মসলিনের কাপড় তৈরির ইতিহাস প্রায় সাড়ে ৪ শত বছরের পুরোনো। ইতিহাস খ্যাত মসলিন কাপড় প্রচীনকালে এখানে তৈরী হতো। মিশরের মমির শরীরে পেচানো মসলিন এই সোনারগাঁয়ের তৈরি বলে জানা যায়। বর্তমানে জামদানি শিল্প টিকে থাকলেও মসলিন শিল্প বিলুপ্ত।

নারায়ণগঞ্জের ( narayanganj ) চাষাড়া একালা জুড়ে গড়ে উঠেছে ছোট বড় অনেক ব্যবসা কেন্দ্র। এক কথায় বলা যায় চাষাড়া এখন নারায়ণগঞ্জের প্রানকেন্দ্র।

নারায়ণগঞ্জ জেলার শিল্প প্রতিষ্ঠান

নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) যথাক্রমে সতের এবং  আঠার শতাব্দীর প্রথম দিকে পর্তুগীজ এবং ইংরেজী ব্যবসায়ীদের আগমনের পর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জকে পাট শিল্পের কেন্দ্রে রুপান্তরিত করা হয়। ১৯৫১ সালের ১২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যানদীর পূর্ব তীরে বিশ্বের বৃহত্তম পাটকল আদমজী প্রতিষ্ঠা হয়।সোনারগাঁ খুব সুক্ষ সুতার তৈরী মসলিন শিল্পের জন্য পরিচিতি লাভ  করে। ১৯২৭ সালে শীতলক্ষ্যা তীরে বাবু সূর্য কুমার বোস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জের ঢাকেশ্বরী কটন মিল যা ঢাকা পুরো ব্রিটিশজেলার প্রথম টেক্সটাইল মিল ছিল। এছাড়া ১৯২৯ সালে চিত্তরঞ্জন কটন মিল, ১৯৩২ সালে Luxmiনারায়ণগঞ্জ কটন মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের প্রধান হোসিয়ারি উৎপাদন কেন্দ্র। ১৯২১ সালে বাবু সতীশ চন্দ্র পাল নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে প্রথম হোসিয়ারী কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। নারায়ণগঞ্জের বসুন্ধরা এবং মেঘনা গ্রুপের বিভিন্ন শিল্প কারখানা যেমন সিমেন্ট, চিনি, বোতলজাত পানি সহ অন্যান্য পন্যের শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জের পাগলা, আলিকদম, ফতুল্লা, আড়াইহাজার, রুপগঞ্জে অনেক ইটখোলা আছে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো মতে নারায়ণগঞ্জে মোট শিল্প ইউনিট সংখ্যা ২৪০৯ টি। এগুলো হল খাদ্য, পানীয় এবং তামাক ৩৭৭টি, পাট ,তুলা, বস্ত্র ও চামড়া ১৩২০ টি, কাঠ পন্য ৪৯টি, সজ্জা এবং কাগজ পন্য ৩০টি,  রাসয়নিক পন্য ১০৪টি, অ-ধাতব পন্য ১৭০টি, মৌলিক ধাতু পন্য ১০১টি, গড়া ধাতু , যনত্রপাতি ও সরঞ্জাম ২৩০টি এবং অন্যান্য উৎপাদন -২৮টি ।

সুতাশিল্প

নারায়ণগঞ্জ শহরের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবসিহত টানবাজার বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাইকারী তুলাভিত্তিক  সুতার বাজার। এখানকার বর্তমান  ক্ষয়িঞ্চু .সুতা ব্যবসায়ীরা এখনও তাদের পূর্ব পূরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখারচেষ্টা করছেন। বৃটিশ শাসন ব্যবস্থার শেষার্ধে নারায়ণগঞ্জে উৎপাদিত সুতা ও কাপড়ের খ্যাতি সারা বিশ্বে এমন একটি স্তরে পৌছায় যে, তৎকালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জকে .ম্যানচেষ্টার অফ এশিয়া বলা হতো। রাজা সুকুমার বোস ১৯২৭ সালে প্রথম কটন মিল (লক্ষী নারায়ন কটন মিল) প্রতিষ্ঠা করে এবং পরবর্তীতে তার অনুসরনে বাবু রমেশ চন্দ্র রায় ১৯৪২ সালে চিত্তরঞ্জন কটন মিল প্রতিষ্ঠা করে যা বর্তমানে শুধু একটি গৌরাবান্বিত অতীত ইতিহাস।

নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার ব্যবসায়ীরা স্থানীয় স্পিনিং মিলের এজেন্ট। তারা সাধারনত স্পিনিং মিলের সাথে বার্ষিক, দ্বিবার্ষিক বা ত্রিবার্ষিক চুক্তি করে থাকে। চুক্তি মোতাবেক স্পিনিং মিলের উৎপাদিত পন্য সুতা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত সুতার ব্যবসায়ীদের কাছে টানবাজারের মাধ্যমে যায় এবং তারা গুদামজাত করে। সুতা ব্যবসায়ীরা তাদের উক্ত গুদাম থেকে সাধারনত খুচরা বিক্রেতা বা টেক্সটাইল মিলের নিকট সুতা বিক্রয় করে থাকে।

বাংলাদেশের তাঁত শিল্পে বিশেষ করে নরসিংদীর বাবুর হাট, সিরাজগঞ্জের সোহাগপুর, এনায়েতপুর এবং শাহজাদপুর, কুষ্টিয়ার বসুরখালী ও টাঙ্গাইলের তাঁতীদের সুতার উৎস নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের সুতার বাজার। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সুতার বাজার নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের সুতা খাতে বর্তমানে নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সুতার কাঁচা মালের দাম বৃদ্ধি ও ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি দ্রুত সুতা খাতকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। তাছাড়া বৈষম্যমূলক শুল্ক ও মুদ্রা নীতি, কাঁচামালের অপ্রতুলতা, মূলধন বা পুঁজির অভাব, উপযুক্ত প্রযুক্তির অভাব, ব্যাংক গুলোর চড়া সুদের হার, অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ, পরিবহন সমস্যা, সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, অতিরিক্ত করারোপ, স্পিনিং মিলগুলোর চুক্তি ভঙ্গের প্রথা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নীরবতা সুতার শিল্পের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করছে। আরও সমস্য হলো ৩০ কাউন্টের নিচে এবং ৮০ কাউন্টের উপরের সুতা আমদানী ব্যবসা  বান্ধব নয় এবং রপ্তানীমূখী পোষাক শিল্পের মালিকরা বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত যে সুতা আমদানী করে তা স্বল্প দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে যা সুতা খাতে অশনিসংকেত বলে প্রতীয়মান হয়।

অপরিসীম সম্ভাবনাময় এ খাতকে উজ্জীবিত করতে হলে সরকারকে অবশ্যই তুলা চাষীদের ভর্তুকি দিতে হবে, উন্নতমানের তুলা বীজ সরবরাহ করতে হবে, অনাবাদী জমিতে তুলা চাষ করতে হবে অর্থাৎ সুতার কাঁচা মালের সহজলভ্যতা সৃষ্টি করতে হবে এবং ব্যবসা বান্ধব শুল্ক ও মুদ্রানীতি প্রণয়ন, রপ্তানীমুখী পোষাক শিল্পের মালিকদের সুতা আমদানীতে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে, ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমাতে হবে, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বিশ্চিত করতে হবে এবং ইনসেনটিভ প্যাকেজের ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশের সুতা ব্যবসায়ীদের দ্বারা গঠিত সমিতি হলো বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস এসোসিয়েশন। সারা দেশে দু’টি ক্যাটাগরীতে (এসোসিয়েশন গ্রুপ ও জেনারেল গ্রুপ) তাদের প্রায় ১,৫০০ সদস্য রয়েছে। এর প্রধান কার্যালয় নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানটি এফবিসিসিআই এর তালিকাভুক্ত সদস্য বাংলাদেশ ইর্য়ান মার্চেন্টস এসোসিয়েশন সুতা ব্যবসায়ীদের জন্য একটি প্লাটফরম যেখানে সুতা ব্যবসায়ীরা তাদের অধিকার রক্ষা, সুবিধা সংরক্ষণ ও অসুবিধা দূরীকরণে চেষ্টাকরে থাকে।

অবকাঠামো, সহায়ক বানিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি এবং তুলনামূলক সুবিধাজনক শ্রম নির্ভর শিল্পের উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ আজ বিনিয়োগের জন্য চমৎকার সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ সরকারের গৃহীত অর্থনৈতিক সংস্কারের ফলে স্থানীয় ও বিদেশী  বিনিয়োগকারীরা এককভাবে বা যৌথভাবে সুতা শিল্পখাতে বিনিয়োগ করবে এবংদেশীয় সুতা শিল্প পুনরায় তার স্বর্নযুগে ফিরে যাবে এই প্রত্যাশা সকলের।

নারায়ণগঞ্জ জেলার নদনদী

নারায়ণগঞ্জ (narayanganj) জেলা ছয় (০৬) টি নদী দ্বারা বেষ্টিত। নারায়ণগঞ্জের মধ্য দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী প্রবাহিত। পূর্ব সীমানা দিয়ে মেঘনা নদী, পশ্চিম সীমানার কিছু অঞ্চল দিয়ে বুড়িগঙ্গা এবং দক্ষিণ/পশ্চিম সীমানায় ধলেশ্বরী নদী প্রবাহিত। ঢাকা থেকে প্রায় ২০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে লাঙ্গলবন্দের মধ্য দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহীত হয়েছে। প্রতিবছর চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে এই স্থানে ব্রহ্মপুত্র নদে পুণ্যস্নানার্থে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তপ্রাণের আগমন ঘটে। ভক্তগণের বিশ্বাস এ সময় ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের, এ স্নানে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভ করে পাপমোচন হয়। এই স্নানই অষ্টমী স্নান নামে অভিহিত। অধিকাংশ স্থানীয় লোকজনের বিশ্বাস, চৈত্রের শুক্লাষ্টমীতে জগতের সকল পবিত্র স্থানের পুণ্য ব্রহ্মপুত্রে মিলিত হয়। নদীর জল স্পর্শমাত্রই সকলের পাপ মোচন হয়। যে এই পবিত্র জলে স্নান করে সে চিরমোক্ষ লাভ করে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার দর্শনীয়স্থান

  • প্রাচীন বৌদ্ধ মঠ, বারদী
  • বারদী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম ও মন্দির
  • লাঙ্গলবন্দ স্নান ঘাট (পুন্য স্নানের জন্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুন্য তীর্থ -স্নান )
  • লাঙ্গলবন্দ প্রাচীন মন্দির
  • সাব্দী কালী মন্দির
  • সাব্দী মঠ
  • রাজা লক্ষী নারায়ণ মন্দির (১১৭৩)
  • লক্ষী নারায়ণ পুষ্কুরিনি
  • লক্ষী নারায়ণ কটন মিল
  • সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের সমাধি (১৩৯৩-১৪১১)
  • কাজী সিরাজউদ্দিনের সমাধি (১৩৯৩-১৪১১)
  • পাঁচ পীরের সমাধি
  • জয়বাবা লোকনাথ মন্দির (১৪০১)
  • বন্দর শাহী মসজিদ (১৪৮১)
  • বন্দর শাহী মসজিদ পুষ্কুরিনি বা “গায়েবানা পুকুর’ (১৪৮১)
  • সুলতান জালাল উদ্দিন ফতেহ শাহের এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ (১৪৮৪)
  • কাইকারটেক হাট
  • লর্ড ইংরেজ সাহেবের বাংলো (ধ্বংসাবশেষ )
  • বাবা সালেহর মসজিদ (১৫০৫)
  • বাবা সালেহর সমাধি (১৫০৬)
  • গোয়ালদী মসজিদ (১৫১৯)
  • কদম রসূল দরগাহ (১৫৮০)
  • কদম রসূল সুলতানি মসজিদ (১৫৮০)
  • কাঠ গোলাপ স্থান
  • গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড বা “সড়ক ই আজম “
  • সোনাকান্দা হাট
  • সোনাকান্দা দুর্গ (১৬৬০)
  • ত্রিবেণী ঈশা খান পরিখা (সোনারগাঁও থেকে সোনাকান্দা) (১৬৬০)
  • ত্রিবেণী পুল (১৬৬০)
  • হাজীগঞ্জ দুর্গ (১৬৬৩)
  • কেল্লার পুল (১৬৬৩)
  • ত্রিমোহনী পুল (১৬৬৬)
  • পাগলা পুল (১৬৬৬)
  • বিবি মরিয়মের সমাধি, তোরণ দ্বার, অভ্যর্থনাগার। (১৬৭৮)
  • বিবি মরিয়মের মসজিদ
  • আশরাফিয়া জামে মসজিদ, আমলাপাড়া
  • ঈসা খাঁ জমিদার বাড়ি
  • পানাম নগর, সোনারগাঁও
  • “কোম্পানি কুঠি” বা “নীল কুঠি”
  • সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর
  • (অধুনা লুপ্ত) আদমজী জুট মিল
  • জিন্দা পার্ক
  • রাসেল পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানা
  • মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি
  • সাব্দী কালী মন্দির
  • লর্ড ইংরেজ সাহেবের কুঠি
  • বায়তুল আমান (১৯৩৯)
  • বোসে কেবিন (১৯৪২)
  • এ কে এম রহমত উল্ল্যাহ মুসলিম ইনস্টিটিউট (১৯৫২)
  • বাংলার তাজমহল
  • বাংলার পিরামিড
  • কাঁচপুর সেতু
  • কাঞ্চন সেতু
  • সুলতানা কামাল সেতু
  • পূর্বাচল উপশহর
  • রূপায়ণ উপশহর
  • পন্ডস গার্ডেন
  • সোনাকান্দা স্টেডিয়াম
  • টি হোসেন গার্ডেন, বাগান বাড়ি।
  • জালকুড়ি বোট ক্লাব
  • নম পার্ক
  • মেরি এন্ডারসন (পর্যটনের ভাসমান রেস্তোরা)
  • এডভ্যাঞ্চার ল্যান্ড
  • জাতীয় ক্রিকেট ষ্টেডিয়াম (৩য়), ফতুল্লা
  • রয়েল রিসোর্ট
  • বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি
  • গোপালদী জমিদার বাড়ি
  • সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি

নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রখ্যাতব্যক্তি

  •  এ.কে.এম আব্দুল আলী – ভাষা সৈনিক ও শ্রমিক নেতা
  • মো. হাসান- ভাষা সৈনিক
  • মোস্তফা সারওয়ার- ভাষা সৈনিক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকায় আনার অন্যতম উদ্যোক্তা
  • খান সাহেব ওসমান আলী – ভাষা সৈনিক রাষ্ট্রীয় পদক প্রাপ্ত
  • ঈসা খাঁ
  • জ্যোতি বসু – সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ভারত।
  •  এ.কে.এম শামসুজ্জোহা, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয় পদক প্রাপ্ত মরনোত্তর, সাবেক সংসদ সদস্য
  • আলী আহাম্মদ চুনকা – প্রথম পৌর পিতা
  • পারভীন সুলতানা দিতি – অভিনেত্রী
  • হামিদ কাফি- কবি, সাংবাদিক,
  • নিথর মাহবুব- মূকাভিনয় শিল্পী, সাংবাদিক
  •  ব্ল্যাক আনোয়ার – অভিনেতা
  • বেনজির আহমেদ – কবি ও লেখক।
  • শাকিব খান ,অভিনেতা
  • রেজাউল করিম আদিল- চলচ্চিত্র খল অভিনেতা
  • ইদ্রিস চৌধুরী – চলচ্চিত্র কৌতুক অভিনেতা
  • নাজমুল ইসলাম অপু ,ক্রিকেটার
  • মোনেম মুন্না – ফুটবলার
  • আবদুল্লাহ আল রাকিব – দাবা খেলোয়াড় (৪র্থ বাংলাদেশী গ্র্যান্ড মাস্টার খেতাবধারী)
  • শাহরিয়ার হোসেন – ক্রিকেটার
  • আতহার আলী খান – ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার
  • মরহুম শফিউল্যাহ মৃধা – ভাষা সৈনিক
  • আহছান উল্যাহ মৃধা – ভাষা সৈনিক
  • মনোয়ার হোসেন শোভা – কমরেড, লেখক ও সাহিত্যিক
  • আশরাফউদ্দিন চুন্নু – জাতীয় ফুটবলার
  • সম্রাট হোসেন এমিলি- জাতীয় ফুটবলার
  • হাজী আবুল কাশেম- জাতীয় দলের গোলরক্ষক
  • ওস্তাদ আলাউদ্দিন খা-ফুটবলার
  • দুলু আফেন্দী- কোচ

বিঃদ্রঃ এখানে দেওয়া সকল তথ্য ইন্টারনেট এর বিভিন্ন তথ্যমূলক ওয়েবসাইট ও স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো তথ্যে ভুল থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সঠিক তথ্য দিয়ে ভুল টা সংশোধন করার জন্য আমাদের সাহায্য করবেন।

তথ্যসূত্র:
স্থানীয় লোকজন
https://bn.wikipedia.org
http://www.narayanganj.gov.bd

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here