নয়আনী জমিদার বাড়ি ( noyani zamindar bari ) ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলা সদরে অবস্থিত তৎকালীন একটি জমিদার বাড়ি। জমিদার বাড়িটি বর্তমানে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ২০১৪ সালে স্থাপনাবিহীন এই পুরাকীর্তিকে প্রত্নতত্ত্বের তালিকায় লিপিবদ্ধ করে।
শেরপুর এক সময় জমিদার অধ্যুসিত অঞ্চল ছিল। শের আলী গাজী ছিলেন শেরপুর পরগনার শেষ মুসলিম জমিদার। খ্রিষ্টিয় অষ্টাদশ শতাব্দীর সূচনায় দশকাহনীয়া বাজু’র জায়গীরদার হন গাজী বংশের শের আলী গাজী। এই খ্যাতিমান শাসক ২১ বছরকাল তার শাসনকার্য পরিচালনা করেন। কিংবদন্তী খ্যাত এই শাসকের নামেই জেলার নামকরন হয় শেরপুর। নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁর বিচারে শের আলীর গাজীর জমিদারি বাতিল করে রামনাথ চোধুরীকে শেরপুর পরগনার জমিদারি দেয়া হয়। তিনি ছিলেন শেরপুুুুুুুুুুুুুর পরগনার প্রথম হিন্দু জমিদার। তার উত্তরসুরীরাই পরবর্তীতে ছিলেন শেরপুর পরগনার জমিদার। ১৭৯০ সালে ময়মনসিংহের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টর ডব্লিউ রাটন শেরপুরের এই জমিদারদের সঙ্গে দশসনা বন্দোবস্ত সম্পাদন করেন। পরবর্তীতে ষ্টিফেন বায়ার্ডের সঙ্গে তাদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়।
১৮২০ সালে শেরপুরের চৌধুরীদের ষোল আনী জমিদারি প্রথমে নয়আনী ও সাত আনীতে ভাগ হয়। পরে সাতআনী বিভক্ত হয় তিন আনী,পনে তিনআনী, আড়াইআনী বড় বাড়ী, আড়াই আনী ছোট বাড়ী ও দেড় আনী বাড়ীতে । আজ নেই জমিদার, নেই তাদের জমিদারি। আছে শুধু কিছু স্মৃতি চিহ্ন। সংরক্ষনের অভাবে সেগুলোও নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে।
আনুমানিক উনিশ শতকের শেষ দিকে অথবা আঠারোশ‘ শতকের শেষের দিকে নয়আনী জমিদার বাড়িটি স্থাপন করা হয়ে থাকে। তৎকালীন সময়ে বাড়িটির চারপাশে জলাধার দিয়ে ঘেরা ছিলো ও আশেপাশে প্রার্থনার উদ্দেশ্যে আরও বেশ কয়েকটি মন্দিরও নির্মাণ করা হয়েছিলো। এছাড়াও এর পাশেই ছিলো রঙ মহল। উপমহাদেশে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর ও ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির সময় নয়আনীর তৎকালীন জমিদার বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারত চলে যান।১৯৪৭ সালের পর থেকে জমিদার বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে থাকে। এরপর ১৯৬৪ সালে শেরপুর কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে নয়আনী জমিদার বাড়ি ও এর রঙমহল কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করে সেটি ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত জমিদার বাড়িটি প্রথমে শেরপুর মহকুমা পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ৯০–এর দশকের শুরুর দিকে জমিদার বাড়িটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলা হয় ও সেখানে নতুন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয় এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন তৈরি হয়।
কিছু ছবি
বিঃদ্রঃ এখানে দেওয়া সকল তথ্য ইন্টারনেট এর বিভিন্ন তথ্যমূলক ওয়েবসাইট ও স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো তথ্যে ভুল থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সঠিক তথ্য দিয়ে ভুল টা সংশোধন করার জন্য আমাদের সাহায্য করবেন এবং এই তথ্য টি পরে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে তথ্যটি শেয়ার করবেন ।