মৌলভীবাজার জেলার পরিচিতি

1
1650

মৌলভীবাজার (moulvibazar) জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। মৌলভীবাজার পৌরসভাকে বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর পৌরসভা হিসাবে বিবেচনা করা হয় |

মৌলভীবাজার জেলার পটভূমি (moulvibazar)

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার মৌলভীবাজার জেলা। এ জেলার আয়তন ২৭৯৯ বর্গ কিলোমিটার। এর উত্তরে সিলেট জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলা।

প্রাচীন ইতিহাস: বহুপূর্ব থেকেই মৌলভীবাজার (moulvibazar) তথা সিলেট অঞ্চল পবিত্র ভূমি হিসাবে পরিচিত। রামায়ন ও মহাভারত এর মত উল্লেখযোগ্য মহাকাব্যে এ অঞ্চলের উল্লেথ রয়েছে। মৌলভীবাজার অঞ্চলের দক্ষিণ-পূর্বাশেংর কিছু অংশ ছাড়া বাকি সবটুকুই কামরূপ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

মোগল আমল: মোগল আমলে বর্তমান মৌলভীবাজার (moulvibazar) অঞ্চল মোগল সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। মোগল সম্রাট আকবরের সময়ে এক যুদ্ধে ইটা রাজ্যের রাজা সুবিদ নারায়নের মৃত্যুর পর ইটারাজ্যের সমূহভুমি ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে পাঠান বীর খাজা ওসমানেরঅধিকারে আসে। ১৬১২ সালে সিলেটের অধিকর্তা মোঘল সেনাপতি ইসলামখানের আক্রমনের পূর্ব পর্যন্ত ইটা রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন খাজা ওসমান।

সুলতানি আমল: বর্তমান সিলেট অঞ্চল বাংলার সুলতান শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের (১৩০১-১৬২২) সময় মুসলমানদের অধিকারে আসে। আরবের ইয়েমেন থেকে আগত প্রখ্যাত দরবেশ হযরত শাহজালাল(রঃ)এর সিলেট আগমনের পর তাঁর সঙ্গীসাথীদের মধ্যে অন্যতম হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা(রঃ) ইসলাম প্রচারের জন্য মৌলভীবাজার অঞ্চলে আসেন। তিনি বাগদাদের অধিবাসী ছিলেন। মৌলভীবাজার শহরে তার মাজার রয়েছে।

বৃটিশ আমল: ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতা হারানোর পরই এদেশে ইংরেজ শাসন প্রবর্তিত হয়। বৃটিশ সরকার ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ীবন্দোবস্ত প্রথা চালু করে এবং তালুকভিত্তিক জমিদার ও মিরাসদার শ্রেণী সৃষ্টি করে তাদের উপর এদেশের মানুষের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের ভার অর্পণ করে। জমিদার, মিরাসদাররা অবিবেচকের মতসাধারণ প্রজারকাছ থেকে খাজনা আদায় শুরু করে। এর ফলে ইংরেজ কর্তৃক এ দেশবাসীকে শোষনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইংরেজদের শোষন ও শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে স্বাধীনতার প্রথম চেতনা প্রকাশে ঐতিহাসিক সিপাহী বিপ্লব সংঘটনে মৌলভীবাজার অঞ্চলের সিপাহীদের অবদান উল্লেখযোগ্য। ১৮৫৭ সালের ২৩শে ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের ‘লাতু’নামক স্থানের নিকটে একদল বিদ্রোহী সেনা ইংরেজদের মুখোমুখি হয়।

নামকরণ: কথিত আছে যে, সৈয়দ শাহ্‌ মোস্তফা (র:) এর ভাতুষ্পুত্র হযরত ইয়াছিন (র:)এর উত্তর পুরুষ মৌলভী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ মনু নদীর তীরে ১৮১০খ্রিষ্টাব্দে যে বাজার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই বাজারটি কালক্রমে প্রসিদ্ধিলাভ করে। ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে ১ এপ্রিল মৌলভী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বাজারটিকে কেন্দ্র করে ২৬টি পরগনা নিয়ে দক্ষিণ শ্রীহট্ট মহকুমা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে দক্ষিণ শ্রীহট্ট বা সাউথ সিলেট নামের বদলে এ মহকুমার নাম মৌলভীবাজার রাখা হয়। ১৯৮৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার মহকুমাটি জেলায় উন্নীত হয়।

মৌলভীবাজার জেলার তথ্যাবলী

সীমানা   

উত্তরে সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলা, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা, গোলাপগঞ্জ উপজেলা ও বিয়ানীবাজার উপজেলা; দক্ষিণে ত্রিপুরা রাজ্য (ভারত); পূর্বে কাছাড় (ভারত)এবং পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা ও বাহুবল উপজেলা। জেলার প্রধান নদ-নদী ৬ (ছয়)টি- মনু, বরাক, ধলাই, সোনাই, জুড়ী ও কুশিয়ারা।

মোট আয়তন : ২৭৯৯ বর্গ কিঃমিঃ

মোট জনসংখ্যা : ১৯,৯৯,০৬২ জন (২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী)
ক) পুরুষ -৯,৪৪,৭২৮ জন, খ) মহিলা-৯,৭৪,৩৩৪ জন

উপজেলার সংখ্যা : ০৭ টি (মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, বড়লেখা, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও জুড়ী)

পৌরসভার সংখ্যা : ০৫ টি (মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, বড়লেখা, কমলগঞ্জ)

সীমান্ত ফাঁড়ির সংখ্যা : ১৪ টি (কুলাউড়া-০৬,কমলগঞ্জ-০৪, শ্রীমঙ্গল- ০২, বড়লেখা-০২)

সীমান্তবর্তী উপজেলার সংখ্যা:  ০৫টি

ইউনিয়নের সংখ্যা : ৬৭ টি

মৌজার সংখ্যা : ৮৯৯ টি

গ্রামের সংখ্যা : ২,০১৫ টি

মৌলভীবাজার জেলার অভ্যন্তরীণ মানচিত্র

ইউনিয়নগুলো হচ্ছে

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ইউনিয়ন : খলিলপুর ইউনিয়ন,মনুমুখ ইউনিয়ন,কামালপুর ইউনিয়ন, মৌলভীবাজার সদর,আপার কাগাবলা ইউনিয়ন,আখাইলকুড়া ইউনিয়ন,একাটুনা ইউনিয়ন,চাঁদনীঘাট ইউনিয়ন,কনকপুর ইউনিয়ন,আমতৈল ইউনিয়ন,নাজিরাবাদ ইউনিয়ন,মোস্তফাপুর ইউনিয়ন এবংগিয়াসনগর ইউনিয়ন

কমলগঞ্জ  উপজেলার ইউনিয়ন : রহিমপুর ইউনিয়ন,পতনঊষার ইউনিয়ন,মুন্সিবাজার ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ,শমসেরনগর ইউনিয়ন,কমলগঞ্জ ইউনিয়ন,আলীনগর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ,আদমপুর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ,মাধবপুর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ,ইসলামপুর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ

কুলাউড়া উপজেলার ইউনিয়ন : বরমচাল ইউনিয়ন,ভূকশিমইল ইউনিয়ন,জয়চন্ডী ইউনিয়ন,ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন,কাদিপুর ইউনিয়ন,কুলাউড়া ইউনিয়ন,রাউৎগাঁও ইউনিয়ন,টিলাগাঁও ইউনিয়ন,শরীফপুর ইউনিয়ন, পৃথিমপাশা ইউনিয়ন,কর্মধা ইউনিয়ন,ভাটেরা ইউনিয়ন,হাজীপুর ইউনিয়ন

জুড়ী উপজেলার ইউনিয়ন : জায়ফরনগর ইউনিয়ন,পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন,পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন,গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন,সাগরনাল ইউনিয়ন,ফুলতলা ইউনিয়ন, জুড়ী

বড়লেখা উপজেলার ইউনিয়ন : বর্ণি ইউনিয়ন ,দাসের বাজার ইউনিয়ন ,নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়ন ,উত্তর শাহবাজপুর , দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়ন ,বড়লেখা ইউনিয়ন  ,তালিমপুর ইউনিয়ন ,দক্ষিণভাগ উত্তর কাটাল তলী ইউনিয়ন ,দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন ,সুজানগর ইউনিয়ন , পশ্চিম জুরী ইউনিয়ন ,পূর্ব জুরী ইউনিয়ন

রাজনগর উপজেলার ইউনিয়ন : ফতেপুর ইউনিয়ন, রাজনগর,উত্তরভাগ ইউনিয়ন,মুন্সিবাজার ইউনিয়ন,পাঁচগাঁও ইউনিয়ন , রাজনগর,রাজনগর ইউনিয়ন,টেংরা ইউনিয়ন,কামারচাক ইউনিয়ন এবংমনসুরনগর ইউনিয়ন

শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইউনিয়ন :মির্জাপুর ইউনিয়ন,ভূনবির ইউনিয়ন,শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন,সিন্দুরখান ইউনিয়ন,কালাপুর ইউনিয়ন,আশিদ্রোন ইউনিয়ন,রাজঘাট ইউনিয়ন,কালিঘাট ইউনিয়ন এবংসাতগাঁও ইউনিয়ন

মৌলভীবাজার জেলার ঐতিহ্য

মৌলভীবাজার (moulvibazar) বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে একটি ঐতিহ্য মন্ডিত জেলা। দেশের কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতিতে এ জেলার গুরুত্ব অপরিসীম।আকর্ষণীয় অনন্য বৈশিষ্টের কারণে মৌলভীবাজার জেলা পর্যটন শিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৌলভীবাজার জেলায় রয়েছে বৈচিত্র্যময় পরিবেশ, চা বাগান সমূহের দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য এবং মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। আদিবাসীদের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, অভ্যন্তরীণ উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত সুবিধা, প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্য সমাহারে এ জেলাটি অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন। এ ভিন্নতা ছাড়াও মৌলভীবাজার জেলার অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে হযরত শাহ মোস্তফা (র:) এর মাজার শরীফ, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, পৃথিমপাশা নবাববাড়ী, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনষ্টিটিউট, মনু ব্যারেজ, মাধবপুর চা-বাগান লেক, মনিপুরী পল্লী, প্রাকৃতিক গ্যাস ট্রান্সমিশন প্লান্ট, কমলা/লেবু/আনারস বাগান ইত্যাদি।

পাহাড়, টিলা, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, হাওড়/বাওড়/বিল, ঝর্ণা, নদ-নদী পরিবেষ্টিত এবং জীব বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এ জেলা ইকো ট্যুরিজমের (Eco-Tourism)জন্য খুবই উপযোগী। এ কারণে এখানে প্রতি বছর বহু সংখ্যক দেশী-বিদেশী পর্যটক ভ্রমণ করেন। কিন্ত পর্যটকদের চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, আবাসন, বিনোদন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার কারণে পর্যটকগণ অনেকক্ষেত্রে নিরাশ হন। এক্ষেত্রে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহজেই এ জেলাকে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য আরো উপযোগী করে গড়ে তোলা যায়। এ লক্ষ্যে বিনোদনের ব্যবস্থা অন্তর্ভূক্ত করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা, কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মনিপুরী পল্লী, খাসিয়া পল্লী, বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, হাকালুকি হাওড় এবং চা বাগানসহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থানকে সম্পৃক্ত করে একটি প্যাকেজ তৈরী করা সম্ভব হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ জেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

মৌলভীবাজার জেলার ভাষা ও সংস্কৃতি

প্রমিত বাংলা মৌলভীবাজার এর নিজস্ব ভাষা

প্রমিত বাংলা ভাষা :

আমাদের বাড়ি মৌলভীবাজার। আমাদের জেলায় অনেক কিছু আছে। আমাদের জেলার অনেক মানুষ বিদেশে খাকেন । তারা অনেক কষ্ট করে বিদেশ থেকে টাকা পয়সা পাঠান । বিদেশে থাকলেও তাদের মন এদেশে পড়ে খাকে । বিদেশেযাওয়ার কারণেআমরা লেখাপড়ায় অনেক পিছিয়ে গেছি। আমারদের জন্য এটা একটা বড় সমস্যা।

মৌলভীবাজার এর ভাষা :

আমরার বাড়ি মৌলভীবাজার। আমরার জেলাত বহুতা আছে। আমরার জেলার বহুত মানুষ বিদ্যাশ থাকুইন। তারা বহুত কষ্ট করিয়া বিদেশ থাকি পয়সা-কড়ি পাঠাইন। বিদ্যাশে থাকলেও তারার মন অনোপড়ি থাকে। বিদ্যাশে যাওয়ার লাগিআমরা লেখা পড়াত করলামছি। আমরার লাগি ওটা একটা মুটা সমস্যা।

মৌলভীবাজার জেলার শিল্প

মৌলভীবাজার (moulvibazar) এর অর্থনীতির প্রধান ভীত হলো চা শিল্প ও রাবার শিল্প । এ জেলায় প্রচুর পরিমানে চা ও রাবার উৎপাদিত হয় । এ ছাড়াও এ জেলার অর্থনীতিতে এই জেলার পর্যটন শিল্পও বিশেষ ভাবে উল্ল্যেখযোগ্য, তা ছাড়াও এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় শিল্প যা মৌলভীবাজার জেলার অর্থনীতিকে করছে সমৃদ্ধশালী ।

বৃহৎশিল্প:

চা শিল্পঃ

চা বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান শিল্প। বাংলাদেশের মোট ১৬৩টি চা-বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজার (moulvibazar) জেলায় ৯২টি চা বাগান রয়েছে। এজন্য মৌলভীবাজার জেলাকে বাংলাদেশের চা রাজধানী বলা হয়। চা-বাগানগুলোর মধ্যে মাধবপুর চা-বাগান, সাতগাঁও চা-বাগান, রাজনগর চা-বাগান, মাথিউড়া চা-বাগান, সমনভাগ চা-বাগান, দেউন্দি চা-বাগান, ইস্পাহানি গাজীপুর চা-বাগান, জেরিন চা-বাগান, ফিনলে চা-বাগান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

মাঝারী শিল্পঃ

জেলায় মোট ১০৩২ টি মাঝারী শিল্প রয়েছে । তন্মধ্যে বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত আগরআতর শিল্প এবং প্রায় সবগুলো উপজেলায় অবস্থিত প্রাকৃতিক রাবার শিল্পউল্লেখযোগ্য ।

কুটির শিল্পঃ

জেলায় মোট ৪৫৭৫ টি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রয়েছে । তন্মধ্যে শীতলপাটি, বেত, কাঠ ও বাঁশ শিল্প উল্লেখযোগ্য।

জেপিএল ফার্ণিচারঃ

মৌলভীবাজার (moulvibazar) জেলার বিসিক শিল্প নগরীতে জেপিএল ফার্ণিচারের কারখানা অবস্থিত। উক্ত উন্নতমানের সিজন ও ট্রিটেড কাঠের বিভিন্ন ডিজাইনের দরজা ও ফার্ণিচার তৈরী হয়।

মৌলভীবাজার জেলার নদ-নদী

মৌলভীবাজারের নদ-নদী সমূহঃ-

১। মনু নদী (মৌলভীবাজার সদর)

২। ধলাই নদী (কমলগঞ্জ)

৩। ফানাই নদী (কুলাউড়া)

৪। জুড়ী নদী (জুড়ী)

৫। কন্ঠিনালা নদী(জুড়ী)

অমিত সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ। এদেশে বিরাজমান প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশের কাতারে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন অঞ্চলভিত্তিক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং কেন্দ্রমুখী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে এসে অঞ্চলভিত্তিক অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলই ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের দিক দিয়ে স্বকীয় বা অনন্য। অন্যান্য জেলার মত মৌলভীবাজার (moulvibazar) জেলাও রয়েছে কিছু স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য । মৌলভীবাজার জেলার অন্যান্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে জেলাটিকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। পরিকল্পিত উদ্যোগ, সফল বিনিয়োগের মাধ্যমে জেলা ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারলে তা জেলাটির পরিচিতি বৃদ্ধির পাশাপাশি অধিকতর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করতে পারবে। এর ফলে রাজস্ব অর্জনের সম্ভাবনাময় উৎস সৃষ্টির পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতিতে যুক্ত হবে নতুন এক মাত্রা

মৌলভীবাজার জেলার দর্শনীয় স্থান

  • শাহ মোস্তফা -এর মাজার – মৌলভীবাজার শহরের কেন্দ্রস্থলের বেড়ীরপাড়ের দক্ষিণ তীর;
  • রাজা সুবিদ নারায়ণ- রাজনগরের শেষ রাজা।
  • ঐতিহাসিক কমলারানীর দিঘি, রাজনগর।
  • খাজা ওসমান – সপ্তদশ শতকের বাংলার শেষ পাঠান সেনাপতি;
  • চাবাগানসমূহ
  • চা কন্যা ভাষ্কর্য। সাতগাও, মৌলভীবাজার।
  • লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
  • মাধবকুন্ড জলপ্রপাত- বড়লেখা
  • মাটির পুল, বড়লেখা।
  • হাম হাম জলপ্রপাত- কমলগঞ্জ
  • বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান- স্মৃতিস্তম্ভ – কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম আমবাসা;
  • মাধবপুর লেক – মাধবপুর, কমলগঞ্জ
  • গ্রান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফ ক্লাব, শ্রীমঙ্গল।
  • শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত শতাধিক রিসোর্ট।
  • নবাব আলী আমজদের বাড়ি, কুলাউড়া
  • হাকালুকি হাওর,
  • খোজার মসজিদ;
  • গাছপীর আব্রু মিয়ার মাজার – সিরাজনগর;
  • ইউনুছ পাগলার মাজার – সাতগাঁও বাজার, শ্রীমঙ্গল।
  • খাজার টিলা – হযরত শাহ মনজুর আলী রহঃ মাজার সিন্দুরখান, শ্রীমঙ্গল।
  • হযরত খরমশাহ মাজার পাচাউন, মির্জাপুর।
  • হযরত খাজা শাহ হাছন আলী চিশতী রহঃ মাজার লাহারপুর, শ্রীমঙ্গল।
  • হাইল হাওর – শ্রীমঙ্গল;
  • জান্নাতুল ফেরদাউস কম্পলেক্স, শ্রীমঙ্গল।
  • জিলাদপুর তিন গম্ভুজ গায়েবি মসজিদ।
  • বৈকন্ঠ সাধুর জোরা তমাল তলা মন্দির – সাতগাঁও রুস্তুমপুর।
  • অজ্ঞান ঠাকুরের দেয়াল- অন্তেহরি, রাজনগর।
  • ম্যানগ্রোভ ভিলেজ- অন্তেহরি, রাজনগর।
  • বাইক্কা বিল – কালাপুর।
  • বধ্যভূমি – শ্রীমঙ্গল।
  • পুরান গাঁও পাল বাড়ি প্রাচীন মন্দির, সাতগাঁও স্থাপিত সন ১২৫২
  • নির্মাই শিব বাড়ি আশিদ্রোন

কৃতি ব্যক্তিত্ব

  • মো. কেরামত আলী- ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও দানশীল ব্যক্তিত্ব
  • এম সাইফুর রহমান-অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদ
  • লীলা নাগ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী শিক্ষার্থী
  • সৈয়দ মুজতবা আলী-ঔপন্যাসিক
  • চৌধুরী গোলাম আকবর-বাংলাদেশী লেখক
  • মেজর জেনারেল(অবঃ)সৈয়দ ইফতেখারউদ্দিন-কারা মহাপরিদর্শক
  • সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ-ভিপি-ডাকসু,সভাপতি-বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, এমপি, রাজনৈতিক ব্্যাক্তি

বিঃদ্রঃ এখানে দেওয়া সকল তথ্য ইন্টারনেট এর বিভিন্ন তথ্যমূলক ওয়েবসাইট ও স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো তথ্যে ভুল থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সঠিক তথ্য দিয়ে ভুল টা সংশোধন করার জন্য আমাদের সাহায্য করবেন এবং এই তথ্য টি পরে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে তথ্যটি শেয়ার করবেন ।

তথ্যসূত্র:
স্থানীয় লোকজন
https://bn.wikipedia.org

1 COMMENT

  1. The number of unions published on this site is 67, but by calculation it is seen that the total number of unions is 68. Please correct it.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here